Hothat Abar - A Love Story Conversation

হঠাৎ আবার




হঠাৎ আবার - ১

মৃণ্ময়ঃ- আরেহ তুমি! ডাক্তার সাহেব কেমন আছে?
শুভ্রাঃ- আমি কেমন আছি জিজ্ঞাস করবেনা?
মৃণ্ময়ঃ- ডাক্তার সাহেব ভালো থাকলেই'তো তুমি ভালো থাকবে।
শুভ্রাঃ- ভালো। তুমি কেমন আছ?
মৃণ্ময়ঃ- আমিতো সবসময়ই ভালো থাকি।
শুভ্রাঃ- কতদিন পর দেখা! তাই'না?
মৃণ্ময়ঃ- হ্যা। তুমি অনেক বদলে গেছো। কেমন বুড়ি, বুড়ি লাগছে।
             তোমার সেই নক্ষত্রের মত চোখের নীচে অমাবস্যার কালো রেখা পড়ে গেছে।
শুভ্রাঃ- তুমিও কিন্তু কম বদলাওনি। সেই স্পাইক করা চুল বাবরি হয়ে নুয়ে পড়েছে।
             তোমার কাঠবিড়ালের মত চঞ্চলতা কেমন ম্লান হয়ে গেছে।
মৃণ্ময়ঃ- মনটা কিন্তু বদলায়নি।
শুভ্রাঃ- এদিকে কোথায় যাচ্ছিলে?
মৃণ্ময়ঃ- প্রণয়'কে স্কুল থেকে আনতে।
শুভ্রাঃ- বিয়ে করলে কবে?
মৃণ্ময়ঃ- এখনো বেকার।
শুভ্রাঃ- তাহলে প্রণয়?
মৃণ্ময়ঃ- আমার বোনের ছেলে।
শুভ্রাঃ- বিয়ে করনা কেন?
মৃণ্ময়ঃ- তুমি জাননা কেন করিনা?
শুভ্রাঃ- কেন শুধু শুধু নিজের জীবনটাকে নষ্ট করছ?
মৃণ্ময়ঃ- যে জীবন নষ্ট হয়ে গেছে তাকে আর নতুন করে নষ্ট করার কি আছে!
শুভ্রাঃ- মিথ্যে অপেক্ষার পেছনে দৌড়িয়ে কি লাভ বলো?
           প্লীজ, নিজের জীবনটাকে সুন্দর করে গোছিয়ে নাও।
মৃণ্ময়ঃ- যার গোছানোর কথা ছিল সে'তো নাই।
শুভ্রাঃ- আচ্ছা এখন আমি যাই। প্রিয়তার স্কুল ছুটি হয়ে গেছে।
( শুভ্রা পথ ধরে হেটে যাচ্ছে। মৃণ্ময় একা একা দাড়িয়ে ভাবছে " আর কি কোনদিন চলার পথে দু'জনের দেখা হবে")


হঠাৎ আবার - ২

মৃন্ময়ঃ (শুভ্রা না মেয়েটা!) শুভ্রা, এই শুভ্রা।
(শুভ্রা থমকে পেছন ফিরে তাকায়। মৃন্ময় দৌড়ে শুভ্রার কাছে গিয়ে হাঁপাতে, হাঁপাতে।)
মৃন্ময়ঃ কেমন আছো?
শুভ্রাঃ ডাক্তার সাহেব কে জিজ্ঞাস কর গিয়ে 😕
মৃন্ময়ঃ তাকে পাবো কোথাই! 😕
শুভ্রাঃ 😃😃😃, ভালো। তুমি কেমন আছো?
মৃন্ময়ঃ চলে যাচ্ছে।
শুভ্রাঃ চলে যাচ্ছে নাকি চালিয়ে নিচ্ছ?
মৃন্ময়ঃ অগত্যা!!!
শুভ্রাঃ ঘড়ে বউ এনেছ?
মৃন্ময়ঃ এখনো পুরনো প্রতীক্ষায় আছি।
শুভ্রাঃ না এ হয় না!
মৃন্ময়ঃ কেনো হয়না?
শুভ্রাঃ আমি যে আমারই নেই। কিভাবে তোমায় পূর্ণতা দিবো!
মৃন্ময়ঃ পদ্ম পাতার জল ছেড়ে এসো ভালবাসার সমুদ্রে ডোব দেই।
           দেখবে আমাদের ভালবাসা কিভাবে পূর্ণতা পাই।
শুভ্রাঃ কিন্তু সমাজ!?
মৃন্ময়ঃ সমাজ কি পেরেছে আমাদের ভালবাসার মূল্য দিতে?
           তবে আমরা কেনো সমাজের নিয়মে বন্ধি থাকবো?
শুভ্রাঃ তখনতো তুমিই করনি।
মৃন্ময়ঃ তুমি কি পারতেনা অপেক্ষা করতে?
শুভ্রাঃ বাদ দাও এসব পুরনো কথা।
মৃন্ময়ঃ পুরনোই যে আমার চলমান-বর্তমান।
শুভ্রাঃ AnyWay. চাকরি-বাকরি কিছু করো?
মৃন্ময়ঃ Hmmm. সাত বছর হলো একটা কোম্পানিতে জয়েন করেছি।
শুভ্রাঃ WoW! মিষ্টি খাওয়াবানা?
মৃন্ময়ঃ অবশ্যই। চলো।
শুভ্রাঃ না, আজ না।
মৃন্ময়ঃ কেনো?
শুভ্রাঃ আজ আমাদের thirteenth anniversary.  দুজনের একসাথে বাইরে
          Dinner করার plan আছে।
মৃন্ময়ঃ Oh, Sorry!
Happy Anniversary.
শুভ্রাঃ Thank You!
মৃন্ময়ঃ You are Most Welcome.
শুভ্রাঃ আমার তাড়া আছে। ও Wait করছে। আজ তবে যাই। ভালো থেকো। Bye...
মৃন্ময়ঃ তুমিও ভালো থেকো। Bye...
(আমি প্রতীক্ষায় থাকবো। পৃথিবীটা গোল, দেখাতো হয়েই যাবে...)


 হঠাৎ আবার-৩


মৃণ্ময়ঃ- আমার কি যে ভালো লাগছে তোমাকে বলে বুঝাতে পারবনা!
            সেই পুরনো এই নদীর ধারে, এই সময়ে সেই আমরা দুজন।
শুভ্রাঃ- আমারও। কোনদিন ভাবিনি যে তোমার সাথে আবার দেখা হবে।
মৃণ্ময়ঃ- তোমার প্রতিটি স্পর্শ ঠিক যেনো প্রথম চুম্বনের মত হৃদয়কে শিহরিত করে তুলছে।
শুভ্রাঃ- তোমার ভালবাসার কোমল আদর আমাকে প্রথম সঙ্গমের মত এক অদ্ভুদ আনন্দ-ভয়                        অনুভূতির জগতে ভাসিয়ে দিচ্ছে।
মৃণ্ময়ঃ- যে মানুষটির অপেক্ষায় জীবনের ৪১ টি বছর নিঃসঙ্গ একা কাটিয়ে দিয়েছি। সেই মানুষটা                     আজ আমার হাতে হাত রেখে বসে আছে। কথা দাও এই হাতটা কোনদিন ছেড়ে দিবেনা!
             জীবনের বাকিটা সময় দুজন একসাথে পাড়ি দিবো।
শুভ্রাঃ- শত সহস্র বছরের ভাঙ্গা কাচের পথ পাড়ি দিয়ে তোমাকে পেয়েছি।
           কথা দিলাম এই হাতটা আজীবন ধরে রাখবো।
মৃণ্ময়ঃ- (I Love You ) শুভ্রা
শুভ্রাঃ- আমিও তোমাকে অনেক, অনেক, অনেক ভালবাসি মৃণ্ময়।
মৃণ্ময়ঃ- আসো......
শুভ্রাঃ- এই ! আমার Husband এর বাসায় ফেরার সময় হয়ে গেছে। আমাকে এক্ষনি যেতে হবে।
মৃণ্ময়ঃ- এই অস্থিরতা, এই অপূর্ণতা আর ভালো লাগেনা। আর কতদিন...?
শুভ্রাঃ- মন খারাপ করেনা লক্ষ্মীটি। আর কয়েকটা দিন ওয়েট কর। সবকিছু গোছিয়ে নেই।
            তারপর দুজন একসাথে এই শহর ছেড়ে অনেক দূরে অজানা কোন এক শহরে পালিয়ে যাবো।
মৃণ্ময়ঃ- Ok লক্ষ্মীটি আজ তাহলে যাও। Bye
শুভ্রাঃ- গেলাম। bye.


হঠাৎ আবার-৪ (শেষ পর্ব)

শুভ্রাঃ- ডেকেছ কেনো? বলো।
মৃণ্ময়ঃ- কি হয়েছে তোমার? Phone Pick করনা, Text এর Reply দিচ্ছনা!
শুভ্রাঃ- এমনি, কিছু হয়নি,
মৃণ্ময়ঃ- কিছু হয়নি মানে!
শুভ্রাঃ- মানে বুঝনা তুমি?
মৃণ্ময়ঃ- কি বুঝবো!
শুভ্রাঃ- বুঝনা তুমি, আমাদের এসব ঠিক হচ্ছেনা।
মৃণ্ময়ঃ- কি এসব আবোল-তাবোল বলছো তুমি!
শুভ্রাঃ- আমি ঠিকই বলছি। আমাদের যোগাযোগ টা বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।
মৃণ্ময়ঃ- তাহলে এতদিনের একটু-একটু গড়ে তোলা স্বপ্নঘর মুহূর্তেই ভেঙ্গে যাবে।
মৃণ্ময়ঃ- একটু ভালো করে বুঝতে চেষ্টা কর মৃণ্ময়।
            আমার মেয়ে আমার স্বামী তারা আমাকে অনেক ভালবাসে এবং বিশ্বাস করে।
            নিজের একটু ভালোলাগার জন্য তাদের সাথে প্রতারণা করে আমি তাদের কষ্ট দিতে পারবোনা।
মৃণ্ময়ঃ- আর আমি!?
শুভ্রাঃ- আমাকে সত্যিকারের ভালবাসলে পরিস্থিতিটা তুমিও বুঝবে।
মৃণ্ময়ঃ- বুঝিতো। কিন্তু এতো অপেক্ষার পর তোমাকে পেয়েছি, তোমাকে হারাতে চাইনা।
শুভ্রাঃ- এটা ছেলে খেলা নয় মৃণ্ময়।
মৃণ্ময়ঃ- এতদিন তোমার জন্য অপেক্ষা করতে পেরেছি, জীবনের বাকিটা সময়ও তোমার জন্য অপেক্ষা করে কাটিয়ে দিবো।
শুভ্রাঃ- মনে কষ্ট নিও না Pleas. আমার একটা কথা রাখবে?
মৃণ্ময়ঃ- কি?
শুভ্রাঃ- ভালো একজন মেয়ে দেখে বিয়ে করে ফেলো।
মৃণ্ময়ঃ- ok. try করবো।
শুভ্রাঃ- রাগ করলে?
মৃণ্ময়ঃ- সত্যিই রাগ করিনি। নিজের উপর পাপবোধ কাজ করছে।
নিজের ভালোবাসা-ভালোলাগার জন্য কি জঘন্য কাজটাই না করতে যাচ্ছিলাম।
তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও।
শুভ্রাঃ- আরেহ না। এতে তোমার কোন দুষ নাই।
একই দুষে তো আমিও অপরাধী।
এতদিন পর দুজনের হঠাৎ আবার দেখা হয়ে আমরা বর্তমান ভুলে পুরনো দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছিলাম।
কিন্তু বাস্তবতা, বাস্তবটাই । একে রুখার সাধ্য কারোর নেই।
মৃণ্ময়ঃ- তোমাকে ধন্যবাদ শুভ্রা। খারাপ কোনকিছু ঘটার আগেই তুমি ব্যাপারটা অনুধাবন করতে পেরেছ।
সত্যিই তুমি অসাধারন, অনন্যা। আর এই জন্যই আজও তোমাকে ভুলতে পারিনি, বাকি জীবনেও তোমাকে ভুলা Possibol না।
শুভ্রাঃ- হয়েছে, আর মনে রাখতে হবেনা। এবার আমার কথাটা একটু ভেবে দেখো।
মৃণ্ময়ঃ- কোন কথাটা?
শুভ্রাঃ- বিয়ের কথাটা!
মৃণ্ময়ঃ- Ok, ভেবে দেখবো।
শুভ্রাঃ- Thanks.
মৃণ্ময়ঃ- My Pleasure.
শুভ্রাঃ- Hmmm
মৃণ্ময়ঃ- ভালো থেকো...
শুভ্রাঃ- তুমিও ভালো থেকো...
( ভালো থাকুক প্রত্যেকটা আবেগ, ভালো থাকুক বাস্তবতা, ভালো থাকুক ভালোবাসা।
জীবনের জয় হোক।।)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ